হাইব্রিড রাইস বিভাগ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগগুলোর মধে নবীনতম। ব্রি-তে হাইব্রিড ধান নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে ব্রি উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের তত্ত্বাবধানে, Agricultural Reserach Management Project (ARMP) প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের অধীনে গবেষণা প্রক্রিয়ায় ব্রি কর্তৃক বোরো মওসুমের জন্য প্রথম হাইব্রিড ধান, ব্রি হাইব্রিড ধান১, উদ্ভাবিত হয়, যা যশোর ও বরিশাল অঞ্চলে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য প্রকল্পের অধীনে ব্রি-তে হাইব্রিড ধান বিষয়ক গবেষণা জোরদার করা হয়, ফলস্বরূপ ২০০৮ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান২ (বোরো) উদ্ভাবিত হয় যা ঢাকা, কুমিল্লা, যশোর ও রাজশাহী অঞ্চলেবোরো মওসুমে, ২০০৯ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান৩ কুমিল্লা ও রাজশাহী অঞ্চলে বোরো মওসুমে এবং ২০১০ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান৪ আমন মওসুমে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত হয়। দু’বছর পর, ২০১২ সালের আগষ্ট মাসে, হাইব্রিড রাইস বিভাগ নামে ব্রি-তে একটি স্বসতন্ত্র বিভাগ চালু হয়। এ বিভাগের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন ও বীজ উৎপাদনের কলাকৌশল সংক্রান্ত সকল ধরণের গবেষণা পরিচালনা করা, এবং হাইব্রিড ধান সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী সিন্ধান্তে সরকারকে সহায়তা প্রদান করা। হাইব্রিড ধান উদ্ভাবনে গবেষণা আধুনিকায়ন ও জোরদারকরণের মাধ্যমে ব্রি হাইব্রিড রাইস বিভাগ নতুন ৩টি হাইব্রিড ধান উদ্ভাবন ও অবমুক্ত করে যথা, ২০১৬ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান৫ (বোরো, সারা বাংলাদেশ), ২০১৭ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান৬ (রোপা আমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোর অঞ্চল) এবং ২০২০ সালে ব্রি হাইব্রিড ধান৭ (রোপা আউশ- চট্টগ্রাম, রংপুর ও খুলনা অঞ্চল)। ব্রি উদ্ভাবিত হাইব্রিড ধানের জাতগুলো ইনব্রেড উফশী ধানের চেয়ে ১৫-২০% বেশী ফলন দিতে সক্ষম। বোরো মওসুমে ব্রি হাইব্রিড ধান৩ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৫ এবং আমন মওসুমে ব্রি হাইব্রিড ধান৬ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এছাড়া, ব্রি হাইব্রিড রাইস বিভাগ এ পর্যন্ত দেশীয় আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে সক্ষম এমন ৪০টি মাতৃ সারি ও ৫০টি পিতৃ সারি বাছাই ও সংকরায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছে যা আউশ, আমন ও বোরো মওসুমে আবাদ করা সম্ভব হবে।